কাল্পনিক ভাবে আসা বাস্তবিক প্রেম

জীবনে এমন অনেক কিছুই ঘটে যায় যা মানুষ কল্পনাও করেনা। তেমনি একটি ঘটনা…
জীবনের বিশটি বসন্ত পার করেও বুঝতে পারিনি মেয়েটি আমাকে এতটা ভালোবাসে। কোনদিন ধারণাও করিনি যে মেয়েটির সাথে সারাজীবন হাতাহাতি করলাম, ঝগড়া করলাম সেই মেয়েটিই আমাকে এতটা ভালোবাসে। মেয়েটির বাবা ও আমার মা একটি সরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করেন। সেই সূত্রে আমরা দু-জনে সরকারী কোয়ার্টারে ছিলাম, সেখানেই আমাদের দু-জনেরই জন্ম। সে ছিল আমার থেকে বয়সে কিছু দিনের বড়। আমরা একসঙ্গে বড় হই। সপ্তাহের ৭দিন বছরের ৩৬৫দিন আমাদের হাতাহাতি, ঝগড়া লেগেই থাকতো। আমাদের দু-জনের মাঝে কোন মিল ছিল না, যেন চৌম্বক দন্ডের উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু। এস.এস.সি পরীক্ষার পর লেখা-পড়ার কারণে আমি শহরে চলে আসি। কিছুটা হলেও সে একা হয়ে যায়। তার সাথে আমার কিছুটা দূরত্ব তৈরী হয়। যখন বাড়িতে যাই আগের মত ততোটা হাতাহাতি, ঝগড়া হয় না। কিছুটা দূরত্বের কারণে কিছুটা বয়সের কারণে। কিছুদিন আগে যখন আমি বাড়িতে যাই তখন মেয়েটির সাথে দেখা হয়, কথা হয়, কথার এক পর্য়ায়ে মেয়েটি আমাকে বলে তুই আর আগের মত নেই অনেক পাল্টে গেছিস, আমার থেকে অনেক দূরে চলে গেছিস তাই না? প্রেম-ট্রেম করছিস নাকি? আমি কোন উত্তর দেই না। সে আমার সাথে ঝগড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বুঝতে পেরে, তাকে থামিয়ে বলি, তুই কি সারাজীবন আমার সাথে ঝগড়া করবি।
সে বলে সারাজীবন…….
আমি বলি, দেখিস তোর বিয়ে হলে তুই সব ভুলে যাবি, তোর বর রাগ করবে ভেবে তুই আমার সাথে কথাও বলবি না। মেয়েটি কি যেন চিন্তা করে তারপর বলে “তুমি বুঝি রাগ করবে”। আমি কিছু বুঝতে পারি না। যেন সাত আসমানের উপর থেকে পড়ে যাই। উদাস দৃষ্টিতে নীল আকাশের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকি। অনুভব করি নীল আকাশে শরতের মেঘ। অনেক ভেবে বলি মানে………,
সে বলে এতদিন তো শুধু শুধু অবান্তর বিষয় নিয়ে ঝগড়া করেছি, বিয়ের পর তোমার সাথে চাল-ডাল, লবণ-তেল, শাড়ি-গহনার জন্য ঝগড়া করবো।
আমি বলি মানে কি? সে বলে আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি। জীবনের থেকেও বেশি, তোমাকে ছাড়া বাচবো না। আমি অনুভব করলাম তাকে ছাড়া আমিও হয়তো বাচবো না।
তারপরও মজা করার জন্য বললাম তোর মত পাগলিকে কে পছন্দ করবে আয়নায় চেহরা দেখেছিস কোনদিন তাছাড়া আমারও পছন্দের ব্যাপার আছে, ভালোই বাসলাম না তার আগেই বিয়ের চিন্তা-ভাবনা, আমার মতামত ছাড়া তুই কি করে……………………..………
কথা শেষ করার আগেই লক্ষ্য করলাম তার হাসি মুখ কেমন মলিন হয়ে গেছে, তার দু-নয়ন আষাঢ়ের প্রথম বর্ষণের জন্য প্রহর গুনছে, তার অশ্রুজল কোনদিনই আমার পছন্দের ছিল না তাই আমি বর্ষণ চাইলাম না। বর্ষণের আগেই আমি আমার মনের ভাব জানিয়ে বললাম এখুনি যদি এভাবে হেরে যাও তবে সারাজীবন ঝগড়া করবে কিভাবে?
কিছুটা লজ্জা পেয়ে বলল, আজকের দিনটাতেও তুমি আমাকে কাদানোর চেষ্টা করলে।
ঝগড়ার শুরুটা করলাম আর কি… হা: হা: হা:……………………




www.facebook.com/ashik.jaki1 

Comments

Popular posts from this blog

হৃদয় ছোঁয়া কিছু কথা ।

ভালোবাসার শেষ চিঠি